সাধ্যের বাহিরে তরমুজ, গরীবের ভরসা বাঙ্গি

নাটোরের বাজারে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ। একটি তরমুজের দাম ১৬০-৪৫০ টাকা পর্যন্ত। আকাশচুম্বী দামের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে তরমুজ। তাই দেশি ফল হিসেবে এখন মানুষের সাধ্যের মধ্যে রয়েছে শুধুই বাঙ্গি। ইফতারেও বেড়েছে বাঙ্গির কদর।

চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই নাটোরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ছোট, বড় ও মাঝারি আকারের বাঙ্গি পাওয়া যাচ্ছে। দামও সস্তা। প্রতি পিস ১০ টাকা থেকে শুরু করে আকারভেদে সর্বোচ্চ ১৩০ টাকা পর্যন্ত উঠছে দাম।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুসারে, নাটোরে ৭৬৮ হেক্টর জমিতে এবার বাঙ্গির চাষ হয়েছে। এরমধ্যে গুরুদাসপুরে ৫২৯ হেক্টর, বড়াইগ্রামে ১১৫ হেক্টর ও বাকিটুকু সদর উপজেলায়।

প্রতি হেক্টর জমিতে ৩০-৪০ মেট্রিক টন বাঙ্গি পাওয়া যায়। লাভজনক ফসল হওয়ায় চাষিরা কম দামে বেচতে ও ভোক্তারা কিনতে পারেন।

প্রতিদিন শহরের স্টেশন বাজার, চকবৈদ্যনাথ, গুড়পট্টি, বড়গাছা বাজার, হাফরাস্তা, আলাইপুর, নীচাবাজার, মাদরাসামোড়, হরিশপুর, দত্তপাড়াসহ বিভিন্ন বাজার আর মোড়ে ভ্যানে বিক্রি করা হচ্ছে বাঙ্গি।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, নাটোরসহ আশেপাশের বাজারগুলোতে বাঙ্গি আসে দুইভাগে বিভক্ত হয়ে। ভোরে স্থানীয় পাইকাররা ছুটে যান বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে। সেখান থেকেই সকালে সংগ্রহ করা হয় পাকা বাঙ্গি।

এগুলো দিনের অর্ধেকটা সময় বিক্রি শেষে আবার ফিরে যান ও সংগ্রহ করেন কাঁচা ও আধাপাকা বাঙ্গি। রাতভর এগুলো পাকার পর পরদিন সকাল থেকেই শহরের বাজারগুলোতে পাওয়া যায় সুস্বাদু পাকা বাঙ্গি।

চাষিদের জানান, বাঙ্গি চাষের জন্য আলাদা জমির প্রয়োজন হয় না। রসুনের জমিতেই বাঙ্গির বীজ বপন করতে হয়। রসুন উঠে যাওয়ার পরই বাঙ্গির গাছ ছড়িয়ে পড়ে ক্ষেতে। সেসময়ে সামান্য সেচ, সার-কীটনাশক দিলেই গাছে ফুল ও ফল ধরতে শুরু করে। রসুনের সাথী ফসল হিসেবে এখানে বাঙ্গির পাশাপাশি তরমুজের আবাদ হলেও তা পরিমাণে অনেক কম।

গুরুদাসপুর থেকে ভ্যানে বিভিন্ন সাইজের ৬০টি বাঙ্গি এনে শহরের মাদরাসামোড়ে বিক্রি করছিলেন হাশেম আলী। তিনি বলেন, ‘বাঙ্গির চাহিদা বেশি। মানুষ খুব কিনে। দামও কম।'

সোহেল রানা নামের স্টেশন বাজার এলাকার এক ক্রেতা বলেন, ‘এখন এক কেজি তরমুজের দাম ৬০ টাকা। ২৫০-৩০০ টাকার নিচে মোটামুটি মানের এক পিস তরমুজ কেনা যায় না। বাঙ্গিই একমাত্র দেশি ফল, যা কিনে খাওয়ার সামর্থ্য কমবেশি সকলেরই আছে।'

পাঠকের মন্তব্য