জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সাথে আপ বাংলাদেশ'র আলোচনা সভা 

ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ) আয়োজিত জুলাই ঘোষণাপত্র: শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি’র শিক্ষার্থীদের ভাবনা শীর্ষক আলোচনা সভা গত বুধবার (১৮ জুন) অনুষ্ঠিত হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দূর্গ খ্যাত উত্তরায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থট (বিআইআইটি) এর কনফারেন্স হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়। সভাটি আপ বাংলাদেশ এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনার ২য় পর্ব, যেখানে অংশীজনরা প্রত্যাশা, প্রাপ্তি এবং অপ্রাপ্তি নিয়ে আলোচনা করেন।

উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইসলামিক থট (বিআইআইটি) এর মহাপরিচালক ড. এম আবদুল আজিজ, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি এর ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাশেদুর রহমান, সমাজবিজ্ঞান ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও কো-অর্ডিনেটর খলীলুল্লাহ মুহাম্মদ বায়েজীদ, আপ বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সদস্য এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনৈতিক বিষয়ক কমিটির প্রধান মিনহাজুর রহমান রেজবী, আপ বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সদস্য এবং জুলাই স্মৃতি বিষয়ক কমিটি প্রধান আব্দুল আজিজ ভূঁইয়া, আপ বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ, আপ বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সদস্য এবং প্রচার ও জনসংযোগ কমিটির যুগ্ম প্রধান সাজ্জাদ সাব্বির, পুসাব এর কেন্দ্রীয় সদস্য মো: শাহ আলম এবং জুলাই আহত যোদ্ধা ও ইউনিভার্সিটি এক্টিভিস্ট নূরা জেরিন। আপ বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ এর সঞ্চালনায় এবং সাজ্জাদ সাব্বির এর ব্যবস্থাপনায় বিকেল ৫টায় শুরু হয় এই আলোচনা সভা।

সভায় প্রধান আলোচক ড. এম আবদুল আজিজ বলেন, “জুলাই আন্দোলনের সাথে যারা যুক্ত আমি তাদের অনুরোধ করবো প্রত্যেককে এই স্পিরিটটা জিইয়ে রাখার জন্যে এবং এটার ফসল ঘরে তোলার জন্যে সবার আগে ঐক্যবদ্ধ ইফোর্ট নিতে হবে। এবং অবশ্যই সেটা ঐক্যবদ্ধ ইফোর্ট হতে হবে। আপনাদের মধ্যে যতগুলো প্লাটফর্ম আছে সবগুলো প্লাটফর্ম থেকে একটা লিয়াজো প্লাটফর্ম করে গ্যাপ গুলো আগে দূর করতে হবে। গ্যাপ গুলোর মধ্যে ব্রীজ তেরী না করা গেলে জুলাই কখনো সফল হবেনা। আমাদের সবাইকে ক্যাটালিস্টের ভূমিকা নিতে হবে এবং সে দ্বায়টা মাথা নিয়ে শুরুতে শহীদ যারা হয়েছেন, গুম যারা হয়েছেন সেটার বিচার করতে হবে অগ্রাধিকার দিয়ে। দ্বিতীয়ত, যারা আহত হয়েছেন তাদের কর্মসংস্থান, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তারপরে সংস্কারের বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে। এইসব বিষয়গুলোতে একমত হয়ে ইলেকশনে যেতে হবে”।

শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি এর সমাজবিজ্ঞান ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও কো-অর্ডিনেটর খলীলুল্লাহ মুহাম্মদ বায়েজীদ বলেন, “আন্দোলনে আমাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা যদি আমরা লিপিবদ্ধ না করি তাহলে আল্টিমেটলি যা হবে ১৯৭১ সালে ১০ বছর পর জন্মগ্রহণ করেও মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট পেয়ে যাবার মত একটা বিষয় হয়ে যেতে পারে। আমরা নিশ্চয় সেটা চাইনা। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক যার আহ্বানে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, জীবনে দিয়েছে কিংবা আহত হয়েছে তাদের ভবিষ্যৎ, ক্যারিয়ার গঠন, দেশ গঠনে তাদের ভূমিকা কি হবে সে বিষয়ে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদেরকে সে দ্বায় দ্বায়িত্বটা নিতে হবে। এবং আমি মনে করি যদি কেউ সেই দ্বায় দ্বায়িত্ব পালন না করেন কেউ তাহলে অবশ্যই তাকে আল্লাহর দরবারে জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে”।

আপ বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সদস্য সাজ্জাদ সাব্বির তার আলোচনায় বলেন, “জুলাইয়ের স্পিরিটকে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য জুলাইয়ের ব্রান্ডিং করা জরুরী। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জুলাইয়ের স্পিরিট ছড়িয়ে দেয়ার জন্য পাঠ্যপুস্তকে জুলাইয়ের ইতিহাস রাখতে হবে। আমরা চাই আজ থেকে ২০ বছর পর যেন ১৮ বছরের কোনো তরুন যেন জুলাই সম্পর্কে জানে, জুলাইকে ধারণ করে। জুলাই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে আমরা সেটার বাস্তবায়ন দেখতে চাই”।

এছাড়াও সকল আলোচকবৃন্দ নিজেদের আলোচনায় জুলাই ঘোষণাপত্রের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবী জানান। বৃষ্টিবিঘ্নিত দিন উপেক্ষা করেও প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী এই আলোচনায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে জুলাইতে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির অবদান তুলে ধরেন এবং জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবী জানান।

উক্ত আলোচনা সভায় আপ বাংলাদেশের স্থানীয় সংগঠকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল্লাহ আল জিহাদ, সাদমান আলম, নাকিবুর রহমান, আবু নোমান, অহিদ খাঁন, এস এম রাকিবুল আলম, মাহি, রেজানুর, সিয়াম সাদিক সহ প্রমুখ।

পাঠকের মন্তব্য