ঢাকা- ৫ আসনে বিএনপি'র মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক ছাত্রনেতা আল মেহেদী তালুকদার

মাতুয়াইলের অলি-গলি, আড্ডা ও সংস্কৃতির ভেতরেই বেড়ে ওঠা এক তরুণ — আল মেহেদী তালুকদার। মাতুয়াইলের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার ও ঐতিহ্যবাহী তালুকদার বংশের সন্তান তিনি। তাঁর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন তালুকদার, যিনি ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম)-এর ডাকে সাড়া দিয়ে মাত্র ২৩ বছর বয়সে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সম্মুখ সারির একজন গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। বর্তমানে তিনি জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

পরিবারের অন্য সদস্যরাও শিক্ষা ও পেশায় প্রতিষ্ঠিত। বড় ভাই সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, আর ছোট ভাই কানাডার একটি বিশ্বখ্যাত সফটওয়্যার কোম্পানিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত।

আল মেহেদী তালুকদারের শিক্ষাজীবনও উজ্জ্বল অধ্যায়ে ভরা। লক্ষ্মীবাজারের ঐতিহ্যবাহী সেন্ট গ্রেগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় স্টার মার্কসহ ঢাকা বোর্ডে স্ট্যান্ড করে সাফল্যের শুরু করেন তিনি। এরপর নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।

২০০২-২০০৩ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ছাত্রদলে সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেন। তিনি বিজনেস ফ্যাকাল্টি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং মাস্টার দা সূর্যসেন হলেও রেখেছেন শক্তিশালী নেতৃত্বের ছাপ। তৎকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিসিএসে যোগদানের নিশ্চিত সুযোগ ত্যাগ করে, তিনি শুধু দেশ মাতৃকার টানে রাজনীতিক পথ বেছে নেন। ১/১১-এর অস্থির সময়ে ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দীন সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তিনি ছাত্র রাজনীতির মাটিতে বিএনপির পতাকা অটুট রেখেছিলেন।

সে সময় বারবার হুমকি, রেইড ও গ্রেফতার-অভিযানের মুখেও পিছিয়ে যাননি আল মেহেদী তালুকদার।ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দীন আমলে তার বিরুদ্ধে একাধিকবার বাসা তল্লাশি চালানো হয়। হাসিনা সরকারের দমননীতির দীর্ঘ ১৭ বছরেও তার নেতৃত্ব ছিলো অবিচল। সাহসী নেতৃত্ব ও সংগঠনশীলতার স্বীকৃতি হিসেবে দেশনায়ক তারেক রহমান তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি মনোনীত করেন।

তার নেতৃত্বেই ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নতুন প্রাণ ফিরে পায়। মধুর ক্যান্টিনে পুনরায় জেগে ওঠে ছাত্র রাজনীতির শ্লোগান — “স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক।” তার সময়েই ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের মিছিল আবার প্রতিদিনের বাস্তবতা হয়ে ওঠে। ফলে একাধিকবার তিনি গ্রেফতার হন, ডিবির ডিমান্ডে কাটান টানা ৫৬ দিন।

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ঢাকা-৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান আল মেহেদী তালুকদার। ‘জাগরণ এক্সপ্রেস’-এর সঙ্গে এক আলাপে তিনি বলেন,

“বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নতুন রাজনীতির প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে আমি নির্বাচন করতে চাই। কৃষক, শ্রমিক, সিএনজি চালক, ছোট দোকানি থেকে শুরু করে গার্মেন্টস কর্মী — সবার জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাই।”

তিনি আরও বলেন, “আমার রাজনীতি ক্ষমতার জন্য নয়, সেবার জন্য। সেবা হবে রাজনীতি, মানুষই হবে শক্তি। ঢাকা-৫ আসনের মাটিতে আমি দেখতে চাই নতুন রাজনীতির এক সূর্যোদয় — যেখানে নেতৃত্ব হবে সেবামুখী, রাজনীতি হবে মানুষের কল্যাণে, আর জনগণই হবে প্রকৃত শক্তির উৎস"।

পাঠকের মন্তব্য