মেসির হাতে মায়ামি শহরের চাবি, দেওয়া হলো যে কারণে
-
- - নিউজ -
- ডেস্ক --
- ৬ নভেম্বর, ২০২৫
২০২৩ সালের ১৫ জুলাই পিএসজি ছেড়ে যুক্তরাস্ট্রের মেজর লিগ সকার (এমএলএস) ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি। এরপরই অনেকটা আড়ালে থাকা ওই লিগ রাতারাতি আলোচনায় আসে, ব্যাপক হারে বেড়ে যায় জার্সি বিক্রি। হু হু করে শেষ হতে থাকে ম্যাচের টিকিট। এত বড় পরিবর্তনের কারিগর যে মেসি সেটি নতুন করে বলাই বাহুল্য। ফলে এমএলএস এবং মায়ামি শহর কর্তৃপক্ষ তার প্রতি বেশ কৃতজ্ঞ।
গতকাল (বুধবার) ফ্লোরিডার কাসেয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে আমেরিকা বিজনেস ফোরাম বা ব্যবসায়ীদের সম্মেলন। যেখানে এমএলএসকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তোলা আর্জেন্টাইন তারকাকে সম্মানিত করা হয়। মায়ামি শহরের মেয়র ফ্রান্সিস সুয়ারেজ একটি প্রতীকি চাবি তুলে দেন মেসির হাতে। যাকে বলা হচ্ছে পুরো মায়ামি শহরের চাবি। সুয়ারেজ বলেন, ‘আমাদের এই শহর, রাষ্ট্র ও বিশ্ব ফুটবলের জন্য আপনি যা করেছেন, তার স্বীকৃতি হিসেবে এই চাবি তুলে দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল আমার। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।’
এমএলএসে যোগদানের পর অভিষেক মৌসুমেই মায়ামি নিজেদের ইতিহাসে প্রথম লিগস কাপের শিরোপা জেতে। ২০২৪ সালে এমএলএসের এক মৌসুমে সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনের রেকর্ড গড়ে জিতে নেয় সাপোর্টারস শিল্ড। ফলে পুনরায় মেসির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইন্টার মায়ামির সহ-মালিক জর্জ মাস, ‘আমি আমাদের অধিনায়ক ও ১০ নম্বর জার্সিধারীর সঙ্গে কিছু ভাগাভাগি করতে চাই। এটি এই শহরের পক্ষ থেকে ছোট উপহার, যেখানে আমাদের সবার হৃদয় নিবদ্ধ। এই অভ্যর্থনা কেবল আপনার জন্য নয়, স্ত্রী আন্তোনেলা রোকুজ্জো এবং আপনার চমৎকার পরিবারের জন্য। যাতে সব সময়ই এটাকে আপনার ঘর মনে হয়।’
৩৮ বছর পেরিয়েও মেসি এখনও মাঠে নিজের স্বভাবসুলভ ছন্দ দেখাতে ভোলেন না। টানা দ্বিতীয় মৌসুমে পেয়েছেন এমএলএসের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। এ ছাড়া ২০২৫ সালে সর্বোচ্চ গোলের পুরস্কার হিসেবে মেসি গোল্ডেন বুটও জিতেছেন। শহরের প্রতীকি চাবি হাতে নিয়ে আপ্লুত সাবেক এই বার্সেলোনা ও পিএসজি ফরোয়ার্ড, ‘ধন্যবাদ, আমি অনেক সম্মানিত বোধ করছি। সত্যি বলতে আমরা এখানে শুরু থেকে ভালোবাসা পেয়েছি, যেজন্য অনেক কৃতজ্ঞ। এই শহরে থাকতে পেরে অনেক আনন্দিত।’
সম্প্রতি নতুন করে আরও ৩ বছরের জন্য মায়ামির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছেন এলএমটেন। সেই কারণও পুনরায় স্মরণ করিয়ে দেওয়ার আগে মেসি ফিরে গেলেন বার্সেলোনায় থাকাকালীন সময়ে, ‘প্যারিস থেকে আমরা যখন এখানে প্রথম আসি, ওই সময়টা কঠিন ছিল। কারণ আমাদের পরিবারের বড় একটা সময় বার্সেলোনায় কেটেছে। যেখানে আমরা সবাই খুশি ছিলাম, পরিবার–বাচ্চারা সবকিছুই পেয়েছে সেখানে। বার্সায় তাদের সবার বেড়ে ওঠা। মাত্র ১৩ বছর বয়সে আমি সেখানে পা রাখি, ২০-২১ বছর বয়সে আমার স্ত্রীও সেখানে পৌঁছায়। শুরুটা মানিয়ে নিতে কঠিন ছিল, তবে সত্যি বলতে আমরা ভালোভাবেই সেখানে থাকতে শুরু করি। দৈনন্দিন জীবন ছিল সবার পছন্দের।’
‘এখানকার (ইন্টার মায়ামি) অধ্যায় চালিয়ে যেতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত, সবাই এখানে থেকে সন্তুষ্ট। একইসঙ্গে এই অধ্যায়ও শেষ হয়ে যাবে ভেবে উদ্বিগ্ন। (পিএসজি ছেড়ে) মায়ামিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত ছিল সম্পূর্ণ পারিবারিক। আমরা থাকতে চাই এমন জায়গায় যেতে পারা অনেক বড় বিষয়, এটি জীবন ধারণ সহজ করে দেয়। এখানে শুরু থেকেই যেমন অভ্যর্থনা পেয়েছি, তা অবিশ্বাস্য। আরেকটি উদাহরণ আজ আবার রচিত হলো’, আরও যোগ করেন বিশ্বকাপজয়ী এই আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।