বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে বাগমারায় শ্রমিক ইউনিয়ন দখলের চেষ্টা

রাজশাহীর বাগমারায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবি ক্যাডারদের নিয়ে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল ও যুবদল নেতাদের বিরুদ্ধে। সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেছেন খোদ বিএনপি নেতারা। শনিবার ১৪ সেপ্টেম্বর দুপুর রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান উপজেলার হামিরকুৎসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বেলাল উদ্দিন। তিনি অভিযোগ করেন, জেএমবি ক্যাডার মামুন মহুরী ওরেফে জেএমবি মামুন, কুখ্যাত জেএমবি ক্যাডার মাহাতাব খামারুর ছোট ভাই ও ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি রুতন খামারু এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেএমবি নেতা আব্দুল মান্নানের ছেলে মামুন, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সুমন, ছাত্রদল নেতা কাউসার, সাব্বির, সান্টু মোল্লা, নান্নু রশিদ হান্নুসহ সন্ত্রাসীরা, রাসেদুল হক ফিরোজ গত শনিবার ৮ সেপ্টেম্বর হামিরকুৎসা শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে গিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না পেয়ে তারা শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয় দখলের চেষ্টা করে। ওই দিন হাট বার হওয়ায় হাটের লোকজনের সহযোগিতায় শ্রমিকরা তাদের প্রতিহত করে। কিন্তু উল্টো তারা বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।

লিখিত বক্তব্যে বেলাল উদ্দিন আরও জানান, শ্রমিক ইউনিয়নে ২৪ জন সদস্য রয়েছে। যাদের মধ্যে ১০ জন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত পদ বহন করে। শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি ইসমাইল হোসেন ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। মূলত ১৫ মামলার আসামী জেএমবি ক্যাডার মামুন মহুরি ও  রতন খামারু কিছু ছাত্রদল নেতাদের ম্যানেজ করে শ্রমিক ইউনিয়ন দখলের চেষ্টা করেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযাযী শ্রমিক ইউনিয়ন দখলে নিষেধ করায় তারা মামলায় আমাকে প্রধান আসামী করে মামলা করেছে। এছাড়াও গত ১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী মামুন তার লোকজন নিয়ে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচার করেছে বলেও অভিযোগ করেন বেলাল উদ্দিন।

বেলাল আরো বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঘটনা স্থল ত্যাগ করে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার আনুমানিক ২০মিনিট পর রাসেদুল হক ফিরোজ (মাস্টার) এবং ইউনিয়ন যুবদলেরর সাবেক সাধারণ সম্পাদক সন্ত্রাসী মামুন মাথায় হেলমেট পরে ছাত্রদল নেতা সুমন, কাউসার, সাব্বির, হান্নু, রতন খামারু, সান্টু মোল্লা সহ ২০/২৫ জন লাঠি সোটা ও দেশীয় অস্ত্রপাতি নিয়ে পুনরায় শ্রমিক অফিস দখল করার জন্য আক্রমন করে। সেখানে তার অদূরে অবস্থান রত বিএনপি সমর্থক দিনার ও ৫নং ওয়ার্ড বি.এনপির সহ: সাংগঠনিক সম্পাদক আজিমুদ্দিন ও ইউনিয়ন বি.এনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক  সোহেল রানা এগিয়ে গিয়ে নিষেধ করলে হান্নু দিনারকে তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে সে হাত দিয়ে প্রতিহত করতে গিয়ে আহত হয়। সোহেল ও আজিমুদ্দিন এগিয়ে গেলে মামুন ও ফিরোজ ও সুমন লাঠি দিয়ে সোহেল ও আজিমুদ্দিনকে এলোপাথারি মারপিট করে। তাদেরকে রক্ষা করতে গেলে শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ও হাট ইজারাদার আঃ রশিদকে হান্নু মাথায় স্বজোরে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তার মাথা ফেটে যায় এবং সেখানে পড়ে গেলে মামুন, রতন, সান্টু এলোপাথারি মারপিট করে গুরুতর আহত করে। 

এমতাবস্থায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে সরজন্ত মূলক দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার এবং এর সঙ্গে জড়িত ছাত্রদল ও যুবদল নেতাদের দল থেকে বহিস্কারের দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান, সহসভাপতি মাহাবুবুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাকিম। এরা সবায় শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ও বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

পাঠকের মন্তব্য