রাবেয়া ও রোকেয়ার সফল অস্ত্রোপচার বড় অর্জন: প্রধানমন্ত্রী
সংযুক্ত মাথার জমজ বোন রাবেয়া ও রোকেয়াকে সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পৃথক করে তাদের সুস্থ শরীরে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়াকে বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন হিসেবে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘আজকে রাবেয়া-রোকেয়া বাড়ি ফিরে যাবে, তাদের মা-বাবার কোলে হেসে খেলে বেড়াবে এটা সত্যি খুব বড় পাওয়া’, বলেন তিনি।
রোববার (১৪ মার্চ) রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)-এ সংযুক্ত মাথা থেকে মুক্তি পাওয়া রাবেয়া-রোকেয়ার গৃহ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত সিএমএইচ-এর অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছি। ঠিক এই সময়ে এত বড় একটা সফল অস্ত্রোপচার করা এবং সফলতা অর্জন করা এটা বাংলাদেশের জন্য অনেক বিরাট অর্জন। মুজিববর্ষে জোড়া মাথা থেকে মুক্তি পাওয়া রাবেয়া-রোকেয়ার শুভ গৃহ প্রত্যাবর্তন সবার জন্য আনন্দের এবং গর্বের।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী যমজ শিশুদের জিজ্ঞেস করেন তারা কেমন আছে। উত্তরে বাচ্চাদের একজন জানায়, সে ভালো আছে এবং সে প্রধানমন্ত্রীকে কেমন আছেন জিজ্ঞেস করায় প্রধানমন্ত্রী জবাব দেন তিনিও ভালো আছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ছোট বোন শেখ রেহানা তাকে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত খবর দেখিয়ে যমজ শিশুদের সম্পর্কে অবহিত করার পরে তিনি সংযুক্ত শিশুদের চিকিৎসার উদ্যোগ নেন। রাবেয়া-রোকেয়ার মতো যমজকে পৃথক করার মতো এক বড় অপারেশন বাংলাদেশে করার কারণ হলো, এখনকার চিকিৎসক এবং টেকশিয়ানদের একটা অভিজ্ঞতা হবে। ৪৮টি অপারেশন এবং ৩৬ ঘণ্টা ধরে অপারেশন করা, এটা বিরাট ব্যাপার। হাঙ্গেরি থেকে আসা চিকিৎসকদের দলটি এখানে দীর্ঘদিন অবস্থান করে অপারেশনটা করেছে। আর সব থেকে ভালো লেগেছে এরা প্রত্যেকেই খুব আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি সবার কাজের আন্তরিকতার প্রশংসা করে বলেন, প্রত্যেকেই এত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন যে, এটা আমি ভাষায় বর্ণনা করতে পারবো না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে, প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত পারদর্শি যারা, তাদের একত্রিত করা হয়েছে। যাতে কোন রকম ফাঁক না থাকে। সব যেন ঠিকমত হয়। কারণ, এটা একটা জটিল অপারেশন ছিল।
তিনি বলেন, রাবেয়া এবং রোকেয়া জোড়া মাথা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘ক্রেনিয় পেগাজ’। এ ধরনের ঘটনা মাঝে মাঝে দেখা গেলেও আমাদের দেশে এটি পৃথক করার ঘটনা সম্পূর্ণ নতুন। সেটি সলভাবে সম্পন্ন করতে পারায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।