দেশি খাবার নিয়ে স্বপ্ন দেখেন রাখী
- - নিউজ রুম -
- এডিটর --
- 7 February, 2021
রুবাইদা রিয়াত রাখী একজন সফল উদ্যোক্তা। ছোট থেকেই পরিবারের সাপোর্ট পেয়ে এতদূর এসেছে। তবে উদ্যোক্তা হতে চাওয়ার স্বপ্ন ছিল আরো আগেই তার। পড়াশোনা শেষ করে চাকরি পেলেও বিয়ে সন্তান সব সামলে চাকরির সুযোগ পাননি। চাকরির চেয়ে ব্যবসার প্রতি আগ্রহ বেশি ছিল তার বেশি। নিজের একটা কিছু সেটা ছোট হোক বা বড় এই চিন্তাটাই তাকে উদ্যোক্তা হতে শেখায়। আর একমাত্র সন্তান সামলে ঘরে বসে অনলাইন ব্যবসাটাকে আগ্রহের সাথে করতে পারবে বিশ্বাসটা ছিল সব সময় তার।
রুবাইদা রিয়াত রাখী জানান, অনলাইন ব্যবসা প্রথম শুরু করি ২০১৪-২০১৫ এর দিকে ড্রেস আর পাঞ্জাবী নিয়ে তখন ব্যবসা চালানো বর্তমান সময়ের মত এত সহজ ছিল না, পরিশ্রমও ছিল বেশি। এক সময় সেটা বন্ধ করে দিতে হয় পারিবারিক কারণে কিন্তু নেশাটা থেকে যায়। আমি ঘর থেকে বের হতাম কম। কেনাকাটা এবং খাবার দাবার প্রায় সব অনলাইন থেকেই করতাম বেশিরভাগ। এভাবেই একদিন মাথায় চেপে বসে খাবার নিয়ে কাজ করার কিন্তু খাবার গুলো হতে হবে একটু আলাদা অবশ্যই।
পোলাও কোরমা বিরিয়ানী তো অনেকেই রান্না করতে হবে তাই আমি না হয় পোলাও কোরমার সাথে দেশী যতরকম খাবার আইটেম আছে সেগুলো নিয়ে শুরু করি। আমি ভালো পারবো সে বিশ্বাস থেকেই শুরু করি। যেমন ভর্তা ভাত, বিভিন্ন রকম ভাজী-সবজী ডাল তরকারি সবরকম দৈনন্দিন খাবার নিয়ে আমি যাত্রা শুরু করি। প্রথমে অনেকেই নাক শিটকীলে বা ভর্তা শুনে অবহেলা করলেও মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে অনেক মানুষই এখন দেখা যায় দেশী এসব খাবার নিয়ে ঝুকেছে যা আমার খুব ভাল লাগে।
দেশী আইটেম বেশিভাগ মানুষের রোজ প্রয়োজনীয় আর তাই আমি এটা মাথায় রেখে যাত্রা শুরু করি এবং আমাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সত্যি বলতে যেদিন শুরু করেছিলাম আমার মা ছাড়া কাউকেই পজেটিভ বলতে শুনিনি। একবারে জিরো ইনভেস্টমেন্টে প্রায় আমি কাজ শুরু করি । খুবই কম অর্থে এবং স্বল্প লাভে আমি আস্তে আস্তে শুরু করি। আমার প্রথম জিদ ছিল আমি কারো উপর নির্ভর হয়ে কোন কাজে হাত দিবো না নিজের যেটুকু আছে সেটুকু সাথে আর শ্রম দেয়ার চেষ্ঠা করবো।
দেশী খাবার নিয়ে আমার স্বপ্ন ছিল এই খাবারগুলোকে আমি আরো বিভিন্ন দেশ যেন জানতে, চিনতে, টেস্ট করতে পায় তা নিয়ে সামনে এগুতে চাই। বাংলাদেশের মজার মজার রান্নার খাবারগুলো সবাই চিনুক সবাই আগ্রহবোধ করুক যেন আন্তর্জাতিক ভাবে আমাদের খাবার গুলো অনেক অনেক দেশ তাদের পছন্দের তালিকায় রেখে চলে জাপানীজ, কোরিয়ান, থাই ফুড সহ বিভিন্ন খাবারের মত বাংলাদেশী ফুড জিনিসটাও যেন সবার কাছে একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হয়ে ওঠে। আলহামদুলিল্লাহ্ প্রায় দুবছর আমার খাবার নিয়ে যাত্রা শুরুর অনেকাংশেই ঢাকা শহরজুড়ে সাড়া পেয়েছি।
একসময় দেশী খাবার নিয়ে কাজ করতে সবাই ভাল বোধ করতোনা কিন্তু এখন অনেকেই এটা নিয়ে কাজ করছেন এবং দেখে ভাল লাগে সেগুলো।কখনোই কারো কোন প্রতিভাকে ছোট করে কেউ দেখবেন নাহ্।।
আমি বিশ্বাস করি মানুষ চাইলে অনেক কিছুই পারে যে যেটাতে আগ্রহী এবং পারবে বলে বিশ্বাস তার সাহস করে সেটি নিয়েই কাজে নেমে পড়া উচিত। যেমন আমার রাধতে ভাল লাগত এবং রান্নার কাজে অনেক কিছু নস্ট হবে ভেবে বা কস্ট বেশি ভেবে অনেকেই এই প্রতিভা নিয়েও ঘরে বসে আছেন ।
তাদের উদ্দেশ্যে বলবো সাহস করে নেমে পড়ুন, লেগে থাকুন। ভবিষ্যতেও আমি যদি আরো সফল হই তারপরেও আমি যতদিন পারি হেমমেড খাবার যা এখন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সেটা ধরে রাখতে কেননা এটার মাধ্যমেই আমার সফলতা আর আমি এটা ধরে রাখতে চাই । আরেকটা জিনিস খুব অনুভব করেছি এ উদ্যোগ নিতে এসে যে রোজ কাজের প্রয়োজনে বাইরে অফিসের কাজের জন্য রান্নার সময় কুলিয়ে ওঠা মানুষগুলো বেশ রান্না করা খাবার নিয়ে সমস্যাগ্রস্ত আর তাই এই মানুষগুলোর কথা ভেবেই বিশেষ করে আমি কাজটাকে আরো বেশি জোরদার করেছি। ভবিষ্যতে আমার খুব ইচ্ছে ছোট খাট একটা রেস্টুরেন্ট দেয়ার যেটার সাথে পথশিশুদের দু'বেলা পেট ভরে খাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে এরকম স্বপ্ন বাস্তবায়নের ইচ্ছে পোষণ করি।
বাংলাদেশী খাবার যেন পুরো দেশজুড়ে বাকী খাবারগুলো থেকে বেশি প্রাধান্য পায়, মেয়েরা আরো এগিয়ে আসুক বিভিন্ন আন্চলিক খাবার নিয়ে, হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী আরো নাম জানা কিংবা নাম না জানা খাবার নিয়ে সেটা মনে প্রানে চাই এবং আহবান জানাই ।
ভর্তা বাহার ও ফুড কেটারীং: https://www.facebook.com/byRubydaRakhee/