আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেন মাহমুদউল্লাহ

অবসরের ফিসফাস চলছিল। মুশফিকুর রহিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার পর মাহমুদউল্লাহ অবসর নিতে পারেন সেই কথা বাসাতে উড়ছিল। গত বুধবার মুশফিকুর অবসরের সিদ্ধান্ত জানান। এক সপ্তাহ পর মাহমুদউল্লাহও নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে বুধবার (১২ মার্চ, ২০২৫) রাতে মাহমুদউল্লাহ লিখেছেন, ‘‘সকল প্রশংসা একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহর জন্য। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ছাড়ার পর মাহমুদউল্লাহ কেবল ওয়ানডে চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এবার সেখান থেকেও সরে আসলেন। টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন আগেই, ২০২১ সালের জুলাই মাসে। তুমুল আলোচিত সেই অবসর। কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেননি। হারারে টেস্টের মাঝপথে মাহমুদউল্লাহকে সতীর্থরা গার্ড অব অনার দেন। লম্বা সময় পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে দেড়শ রানের ইনিংস খেলে আচমকা অবসর নিয়ে নেন।

টি–টোয়েন্টি থেকে অবসর নিতে এমন কোনো নাটকীয়তার আশ্রয় নেননি মাহমুদউল্লাহ। গত বছর ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম‌্যাচ খেলে অবসর নেন। যেই সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এবার ওয়ানডে থেকে ঘোষণা দিয়ে সরে গেলেন।

গত কিছুদিন আগে বিসিবি কেন্দ্রীয় চুক্তি প্রকাশ করে। মাহমুদউল্লাহকে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে রেখে তালিকা চূড়ান্ত করেছিল বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ। তবে ফেব্রুয়ারির পর থেকে নিজেকে চুক্তিতে না রাখার অনুরোধ করেছেন ৩৯ বছর বয়সী ক্রিকেটার। তাই মার্চ থেকে আর বিসিবির চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটার নন তিনি। তখন থেকেই বোঝা যাচ্ছিল তার অবসরের সিদ্ধান্ত যেকোনো সময় চলে আসবে।

নিজের বিদায়ী বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘‘সবকিছু নিখুঁতভাবে শেষ হয় না, তারপরও একটা সময় শেষ বলে সামনে এগিয়ে যেতে হয়। শান্তি........... আলহামদুলিল্লাহ।’’

যোগ করেন, ‘‘আমি আমার সকল সতীর্থ, কোচ এবং ভক্তদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, যারা সবসময় আমাকে সমর্থন করেছেন। আমার বাবা-মা, আমার শ্বশুর-শাশুড়ি, বিশেষ করে আমার শ্বশুর এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমার ভাই এমদাদ উল্লাহকে অনেক ধন্যবাদ, যিনি ছোটবেলা থেকেই আমার কোচ এবং পরামর্শদাতা হিসেবে আমার পাশে থেকেছেন।’’

‘‘এবং পরিশেষে, আমার স্ত্রী এবং সন্তানদের ধন্যবাদ, যারা কঠিন সময়ে আমার সমর্থন করেছেন। আমি জানি লাল-সবুজ জার্সিতে রায়েদ আমাকে মিস করবে।’’

‘‘আমার দল এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য শুভকামনা।’’

২০০৭ সালে কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল মাহমুদউল্লাহর। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাওয়ালপিন্ডিতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচটি তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ হয়ে থাকল।

জাতীয় দলের হয়ে ২৩৯ ওয়ানডেতে ৩৬.৪৬ গড় ও ৭৭.৬৪ স্ট্রাইক রেটে ৫ হাজার ৬৮৯ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ। এই ফরম্যাটে তার সেঞ্চুরি ৪টি, ফিফটি ৩২টি। সর্বোচ্চ অপরাজিত ১২৮। বল হাতে ৮২টি উইকেট নিয়েছেন।

পাঠকের মন্তব্য