জামিনে এসে ধর্ষিতার বাড়িতে আসামিদের ‘অগ্নিসংযোগ’

ঢাকার ধামরাইয়ে দুই মাস আগে বিয়ের প্রলোভনে এক তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় জামিনে মুক্ত আসামিরা ভুক্তভোগীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় হত্যার উদ্দেশ্যেই বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এমনকি মামলা না নিয়ে পুলিশ বিষয়টি মীমাংসা করতে বলেছে বলেও জানান তারা।

বুধবার (৬ অক্টোবর) রাতে ধর্ষিতার বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত উদ্দিন। 

এর আগে বিকেলে ধর্ষিতার দরিদ্র বাবা কাওয়ালীপাড়া ফাঁড়িতে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযুক্তরা হলেন, ধামরাই উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের কাওয়ালীপাড়া এলাকার ধর্ষণ মামলার আসামি সুমন হোসেন, তার ভাই শামীম হোসেন, আমজাদ হোসেন, সেলিম হোসেন ও তাদের ভগ্নিপতি জাহাঙ্গীর হোসেন।

অভিযোগে বলা হয়, দুই মাস আগে মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে একই এলাকার সুমন হোসেন। ঘটনার দুই দিন পর ৮ আগস্ট আমার মেয়ে বাদী হয়ে সুমন ও তার তিন ভাইয়ের নামে মামলা দায়ের করে। ৩১ আগস্ট জামিনে মুক্ত হয়ে অভিযুক্ত সুমনের ভাই শামীম ও সেলিম হোসেন মামলা তুলে নিতে তাদের চাপ দিতে থাকেন। এসময় মামলা তুলে না নিলে হত্যারও হুমকি দেয় তারা। পরে ১১ সেপ্টেম্বর আমি ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। এরপর থেকে আসামিরা আমাদের ক্ষতি করতে ওঁৎ পেতে থাকে। সবশেষ মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে আসামিদের সম্পর্কে ভগ্নিপতি বাড়িতে প্রবেশ করে কেঁচিগেটে বাইরে থেকে তালা দেয়। পরে পাশের দুই চালা টিনের ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এতে ওই ঘরে থাকা প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার মালামাল পুড়ে যায়। এসময় আমাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে ও আমাদের উদ্ধার করে।

ভুক্তভোগীর এক স্বজন বলেন, আমার মামাকে ও তার পরিবারের লোকজনকে হত্যা করতেই পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানো হয়েছিল। আজ বিকেলে মামা ফাঁড়িতে গিয়ে অভিযোগ করছেন। কিন্তু পুলিশ মামলা না নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করতে বলছে।

অভিযুক্ত শামিম হোসেন বলেন, এসব মিথ্যা। আমাদের ফাঁসাতে ওরা নিজেরাই আগুন লাগিয়েছে।

এ বিষয়ে ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত উদ্দিন বলেন, বিকেলে বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অভিযোগ করেছেন এক ভুক্তভোগী। অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীর মেয়েকে ধর্ষণের আসামি। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। তবে কারা অগ্নিসংযোগ করেছে বিষয়টি তদন্ত না করে বলা সম্ভব নয়। আমরা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।

তবে পুলিশ বিষয়টি মীমাংসা করতে বলেছে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন এই উপ-পরিদর্শক।

পাঠকের মন্তব্য