স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের দুই যুগ্ম সচিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসা শিক্ষা শাখার দুই যুগ্ম সচিবের বিরুদ্ধে নানান দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে ওই মন্ত্রণালয়েরই উপদেষ্টার কাছে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেছেন এক ভুক্তভোগী ঠিকাদার ব্যাবসায়ি।

গত ১২ অক্টোবর ভুক্তভোগী রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাবর রোডস্থ ব্যাবসায়ি আবুল কালাম স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন সচিব এবং স্বাস্থ্য সচিব বরাবর পৃথক পৃথক তিনটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন। যার একটি কপি এ প্রতিবেদকের কাছে এসে পৌঁছে।
এ ব্যাপারে মূল অভিযুক্ত যুগ্ম সচিব মল্লিকা খাতুন এ অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এ অভিযোগকে আস্বীকার করে নিজেকে একজন সৎ সরকারি চাকুরীজীবি হিসেবে চিহ্নিত করেন। এছাড়াও এ অভিযোগকে একটি ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেন। 

অপর অভিযুক্ত এডমিন শাখার যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
ভুক্তভোগী আবুল কালাম তার লিখিত বক্তব্যে মল্লিকা খাতুন এবং তার সহযোগী আরেক যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরকে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও সেবা বিভাগের "প্রমানিত" সকল দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মূল অশ্রয়দাতা হিসেবে অবহিত করেন।

অভিযোগপত্রের প্রথমেই আবুল কালাম চিকিৎসা শিক্ষা শাখার যুগ্ম সচিব মল্লিকা খাতুন ও আব্দুল কাদেরকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের নীল নকশা বাস্তবায়নকারি উল্লেখ করে এ বিভাগে অদৃশ্য এক সিন্ডিকেট গড়ার কথা অভিযোগ করেন। ছাত্র জনতার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে দায়িত্ব নিয়ে বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন রকম রদবদল হলেও তার কোন পরিবর্তন হয়নি।

তিনি বলেন, এ সিন্ডিকেটের মূল হোতা হিসেবে থেকে দীর্ঘ প্রায় নয় বছর যাবৎ এ বিভাগে বিভিন্ন ধরনের বদলি বাণিজ্য, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট, মেডিকেল কলেজ সিন্ডিকেট, মেডিকেল, ডেন্টাল ও নার্সিং কলেজের আসন বৃদ্ধি, নতুন প্রতিষ্ঠান অনুমোদন অনুমোদন ও নবায়ন, চিকিৎসকদের বদলি সহ নানান ধরনের টেন্ডার বাণিজ্যের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করেছেন। আর এসকল কর্মকান্ড তার সহযোগী হিসেবে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে কর্মরত আর এক যুগ্ম সচিব আব্দূল কাদের পরোক্ষভাবে কাজ করেছেন। 

এমনকি এ সিন্ডিকেটটি বিভিন্ন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের চাপ প্রয়োগ করে তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের টেন্ডার পাইয়ে দিয়ে ওইসব ব্যাবসায়িদের কাছ থেকে কমিশন খাওয়ারও অনেক অভিযোগ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ওএসডি হওয়া সাবেক স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব আজিজুর রহমানের সহযোগীতায় যুগ্ম সচিব মল্লিকা খাতুন চার মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১০ হাজার কোটি টাকার টেন্ডার বাণিজ্য তার স্বামী ব্যবসায়ীকে দিয়ে করছেন। যদিও মল্লিকা তার স্বামী এ ব্যাবসায়ের সঙ্গে সংযুক্ত নয় উল্লেখ করে বলেন, আমার স্বামী একজন পোশাক উৎপাদনকারী। তার কোন ঠিকাদার ব্যাবসায় নেই।

ভুক্তভোগী ব্যাবসায়ি আবুল কালাম তার লিখিত বক্তব্যে জানান, তারিক হাসান অ্যাসোসিয়েট ও বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের গভর্নিং বডির টেন্ডার কমিটির সদস্য আর্কিটেকচার মনজুরুলের সহযোগীতায় বিভিন্ন কলেজের তাদেও পছন্দের অধ্যক্ষ বসিয়ে তাদের মাধ্যম দিয়ে কোটি কোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্য করেছেন। 

এ ব্যবসায়ি একটি তদন্ত কমিটি দ্বারা নিরপেক্ষ কমিটি করে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য কার্যত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।

পাঠকের মন্তব্য