গ্রামীণ ব্যাংক ও রাষ্ট্র চালানো এক জিনিস না: ফরহাদ মজহার

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে উদ্দেশ করে কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, গ্রামীণ ব্যাংক ও রাষ্ট্র চালানো এক জিনিস না। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা ও নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আপনি সংবিধান রক্ষা করবেন। সংবিধানে কোথায় উপদেষ্টা সরকার আছে। কোন অনুচ্ছেদে আছে। আপনি অবৈধ সরকার। আমি প্রথম দিন থেকে বলছি, আপনি অবৈধ সরকার। তবে অবৈধ সরকার বলার মানে এই না যে আপনাকে আমরা চাই না। এটা মানে হচ্ছে, আপনার প্রথম কাজ আপনার নিজের বৈধতা নিশ্চিত করা। আপনার নিজের বৈধতা নিশ্চিত করবার একটা মাত্র পথ আছে সেটা হল গণঅভ্যুত্থান, কারণ গণঅভ্যুত্থান সংবিধান মেনে ঘটেনি।’

তিনি বলেন, ‘এত বড় আত্মত্যাগের পরে আপনি কিসের ভিত্তিতে নির্বাচনের কথা শুরু করলেন? এটা আমার অভিযোগ আপনার বিরুদ্ধে। আমি প্রথম থেকে বলে এসেছি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বলে কিছু নাই। আমাকে প্রমাণ করুন রাজনৈতিক দল বলে কিছু আছে! রাজনৈতিক দল মানে যারা জনগণের সেবা করে। রাষ্ট্র ও জাতিকে তারা পথ দেখায়। আমাদের এখানে যেটা আছে সেটাকে আমরা কি বলি? আমরা এখানে আছে লুটেরা মাফিয়া শ্রেণী।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আপনি দেশের সমস্যাটা বোঝার চেষ্টা করুন? আপনাকে জাতীয় ঐকমত্য করতে বলেছে কে? আমরা তো জাতীয় ঐকমত্য করতে বলি নাই। আমরা গণঅভ্যুত্থান করেছি। একটা সরকার গঠন করেছি। আপনাকে তো আমরা বলি নাই যে আপনি শেখ হাসিনার ফ্যাস্টিট সংবিধান রেখে এই সংবিধান রক্ষা করার শপথ নিয়ে আপনি একটা উপদেষ্টা সরকার গঠন করবেন। আপনি কেন গঠন করলেন? কি যুক্তি?’

গ্রামীণ ব্যাংক চালানো আর রাষ্ট্র চালানো এক জিনিস না উল্লেখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আপনি শেখ হাসিনার সংবিধান রক্ষার মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থানকে অস্বীকার করেছেন। অতএব আপনি একটি অবৈধ সরকার। আইন কাকে বলে এটা যেন আপনি বোঝেন। গ্রামীণ ব্যাংক চালানো আর রাষ্ট্র চালানো এক জিনিস না। সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই এই যে কথাগুলো আমি বলছি তার উত্তর দিতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে ফরহাদ মজহার আরও বলেন, ‘আপনি কিছু তরুণ ছেলেদেরকে মন্ত্রণালয়ে নিয়েছেন। আমি অভিনন্দন জানাই। ভালো কথা। তাহলে মন্ত্রণালয় তো তারা চালাতে পারে নাই। তরুণদেরকে আপনি নষ্ট করেছেন, তাদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি হয়েছে। কারণ আপনি আমলাদেরকে রেখে দিয়েছেন ওই জায়গায়। শেখ হাসিনার সেই আমলাতন্ত্র ওখানে রয়েছে।’

পাঠকের মন্তব্য