গ্রিন ইউনিভার্সিটির পঞ্চম সমাবর্তনে সনদ পেলেন ৪১২৯ গ্র্যাজুয়েট

বর্ণাঢ্য আয়োজন ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ৪ হাজার ১২৯ জন গ্র্যাজুয়েটকে ডিগ্রি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫ জন চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল ও ১০ জন ভাইস চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল পেয়েছেন।

আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবেশন সেন্টারে এ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ সভাপতিত্ব করেন।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইলিনয়স স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিসটিংগুইসড প্রফেসর ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. আলী রীয়াজ। বক্তব্য দেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খাজা ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ।

সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, সাম্প্রতিক পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সমাজের প্রতি শিক্ষার্থীদের দায়বদ্ধতা বেড়ে গেছে। যারা পরিবর্তনের সামর্থ্য রাখে, তারা গড়তেও পারে। ইতিবাচক দিকে এই সমাজকে চালিত করা, ঘুনে ধরা কাঠামোকে পুনর্নির্মাণ করা এবং ন্যায়ভিত্তিক সুষম সমাজ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে যেসব সম্ভাবনা বিকশিত হতে পারেনি, সেসব সম্ভাবনাকে বিকশিত করার কোনো বিকল্প নেই। যে পথগুলো রুদ্ধ ছিল, তা অবশ্যই উন্মুক্ত করতে হবে। এ সময় তিনি গ্র্যাজুয়েটদের প্রযুক্তি ও মানবিকতার ছোঁয়ায় দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

সমাবর্তন বক্তা অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন, সমাবর্তনের মাধ্যমে শুধু গ্র্যায়েশন পর্বের সমাপ্তির ঘটছে না, বরং আজ থেকে জীবনের আরও একটি পর্বের সূচনা হচ্ছে। আর তা হলো ব্যবহারিক জীবন, নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়া ও নিজের অবস্থান তৈরি করার জীবন। গ্রিন ইউনিভার্সিটির প্রত্যেক গ্র্যাজুয়েটকে সেই চ্যালেঞ্জে মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘গ্র্যাজুয়েটদের ভবিষ্যত যেমন অফুরন্ত সম্ভাবনার; তেমনি অনেক বাধাবিপত্তিরও। তবে আমাদের বিশ্বাস, গ্রিন ইউনিভার্সিটি থেকে অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতা ও মূল্যবোধ তোমাদের ভবিষ্যতের ভিত্তি হয়ে থাকবে। ইতিমধ্যেই গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে এআই ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মত বিষয় চালু হয়েছে। আগামী দিনে ফার্মেসি ও আর্টিটেকচারের মত বিষয় চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।’ এ সময় তিনি সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ-সুবিধার চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি ভবিষ্যতেও এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে গ্রিনকে উত্তোরত্তর এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন বলেন, আগামীর বিশ্ব গতিশীল ও বহুমাত্রিক; যেখানে চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি রয়েছে অসীম সুযোগ ও সম্ভাবনা। সাইবার প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতি, ৫-জি শিল্পবিপ্লব, হাইটেক যোগাযোগ ব্যবস্থার উদ্ভাবন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চ্যাটজিপিটির মতো বিষয়গুলো খাপ খাইয়ে নিয়ে আগামীতে এগিয়ে যেতে হবে। এ সময় গ্র্যাজুয়েশন শেষ করা শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসকে আত্মশক্তিতে রূপান্তর করে অসাধ্য সাধন এবং দেশ ও দশের মুখ উজ্জ্বল করার আহ্বান জানান তিনি।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খাজা ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ বলেন, দক্ষ মানব শক্তি তৈরিতে বিশ্বাসী এবং এ জন্য উচ্চশিক্ষার বিকল্প নেই। তিনি বলেন, ‘আমাদের এম গ্র্যাজুয়েট হতে হবে, যারা গর্বের সঙ্গে দেশকে সারা বিশ্বে প্রতিনিধিত্ব করবে।’ এ সময় উচ্চশিক্ষায় গ্রিন ইউনিভার্সিটির অবদান সংক্রান্ত নানা দিক তুলে ধরেন।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট সদস্য, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, আমন্ত্রিত অতিথি ও অভিভাবকরা ছিলেন।

পাঠকের মন্তব্য