কেন হিন্দু থেকে মুসলিম হয়েছিলেন প্রবীর মিত্র

ঢালিউডের রুপালি পর্দার কিংবদন্তি মুকুটবিহীন বাংলার নবাবখ্যাত অভিনেতা প্রবীর মিত্র রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। গতকাল রোববার রাত ১০টা ১০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। এ অভিনেতার মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর। 

এর আগে এ বর্ষীয়ান অভিনেতা বেশ কিছু দিন শারীরিক জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শরীরে অক্সিজেন–স্বল্পতাসহ বেশ কিছু অসুস্থতায় গত ২২ ডিসেম্বর তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই প্রবীর মিত্র মারা যান।

এদিকে এ অভিনেতা অভিনয় জগতে আসার পর সনাতন ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেন। সেই সময়ের একটি ভিডিওতে প্রবীর মিত্রকে বলতে শোনা যায়— আমি তো কনভার্ট হয়েই ওর মাকে বিয়ে করেছিলাম। তখন মুসলমান হয়েছিলাম। তখন প্রয়োজন হয়েছিল মুসলমান হওয়া।

ধর্ম নিয়ে প্রবীর মিত্রের ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধর্ম নিয়ে আমার কোনো বাড়াবাড়ি নেই। সবার উপরে মানুষ সত্য তার উপরে নাই। মানুষ সবার উপরে বলেও জানান এ অভিনেতা।

উল্লেখ্য, কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র ১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া এ অভিনেতা স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তিনি।

প্রবীর মিত্র ১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। যদিও এ ছবিটি ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি মুক্তি পায়। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তিনি ‘নায়ক’ হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। সর্বশেষ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন 'রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা' সিনেমায়। পরবর্তী সময় নায়ক না হয়ে চরিত্রাভিনেতার দিকে মনোযোগী হয়ে কাজ করেও তিনি দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেন।

তার উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয় পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, 'রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা', ‘পুত্রবধূ’সহ চার শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন।

পাঠকের মন্তব্য