বিয়ের পর সঞ্জয় জানতে পারে তৃতীয় স্ত্রী ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা

এমন সময় যাত্রা শুরু করেছিলেন, যখন তাকে কেউই চিনতেন না। পরে সেই মেয়ে মুম্বাইয়ের পালি হিলের বহু চর্চিত এক পরিবারের সদস্য হয়ে ওঠেন। তিনি মান্যতা দত্ত। বলিউডের সুপারস্টার সঞ্জয় দত্তের তৃতীয় স্ত্রী।

মান্যতার জীবনে প্রথম থেকেই অনেক সমস্যা ছিল। সমস্ত বাধা পেরিয়ে তিনি সঞ্জয়ের জীবনে এসেছিলেন এবং থিতু হতে শুরু করেছিলেন। ঠিক সে সময়ই আর এক বাধা। তার সামনে এসে হঠাৎ হাজির হন তার ‘স্বামী’। সেই ‘স্বামী’ পালি হিলে দত্ত বাড়িতে হাজির হয়ে মান্যতা সম্পর্কে এমন ‘সত্য’ সামনে এনেছিলেন, যা জানার পর তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছিল।

মান্যতার প্রকৃত নাম দিলনওয়াজ শেখ। মুম্বাইয়ের এক মুসলিম পরিবারে জন্ম। যদিও ছেলেবেলার পুরোটাই কেটেছিল দুবাইয়ে। বড় হয়ে দেশে ফেরেন তিনি। তারপর বলিউডে নিজের ভাগ্য যাচাই করতে শুরু করেন।

প্রকাশ ঝার একটি ছবিতে আইটেম গান করার সুযোগ পেয়ে যান তিনি। মান্যতা মনে করেছিলেন, এ বার বোধ হয় প্রচুর ছবির প্রস্তাব আসবে তার কাছে। কিন্তু বাস্তব এতটা সহজ নয় বলিউডে। কোনো ভালো ছবি তিনি পাননি। উপরন্তু একটি বি-গ্রেড ছবিতে সুযোগ পান।

সে সময় মান্যতার বাবা মারা গিয়েছিলেন। পুরো পরিবারের দায়িত্ব মান্যতার ওপরই। ফলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছবিতেই অভিনয় করেন তিনি। সে সময়ই ছবির প্রযোজক তার সঙ্গে সঞ্জয়ের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। তখন দু’জনেই ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নানা সমস্যায় জড়িয়ে ছিলেন। রিয়া পিল্লাইয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের মামলা চলছিল সঞ্জয়ের।

ক্রমে সঞ্জয়ের মনে জায়গা করে নেন মান্যতা। মান্যতাকে বিয়ে করে পালি হিলে দত্ত বাড়িতে নিয়ে ওঠেন সঞ্জয়। কিন্তু এই বিয়ে সঞ্জয়ের বাড়ির সদস্যরা মন থেকে মানতে পারছিলেন না।

বিয়ের শুরু থেকে এসব সমস্যার মধ্যেই ছিলেন মান্যতা। সবাইকে চমকে দিয়ে তার প্রাক্তন ‘স্বামী’ প্রকাশ্যে চলে আসেন। নিজের সঙ্গে মান্যতা এবং এক সন্তানের ছবি নিয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন। দাবি করেন, সঞ্জয়ের সঙ্গে মান্যতার বিয়ে বেআইনি কারণ তখনও নাকি তাদের বিচ্ছেদ হয়নি। পাশাপাশি তার আরও দাবি ছিল, মান্যতা তার এক সন্তানের মা এবং সঞ্জয়কে বিয়ে করার সময় তিনি নাকি ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বাও ছিলেন।

তার ‘স্বামী’ রেহমান আদালতে মামলাও করেছিলেন। এ সময়ে সঞ্জয় কিন্তু সমালোচনায় গা ভাসাননি। স্ত্রীর পাশেই ছিলেন। পরবর্তীকালে রহমানের সত্যি সামনে উঠে আসে। রহমান নামে ওই ব্যক্তি গ্রেপ্তারও হন। মিথ্যা তথ্য দিয়ে আরও কয়েকজন অভিনেত্রীকে এ ভাবেই ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি।

খুব তাড়াতাড়ি সঞ্জয়ের জীবন নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন মান্যতা। তার বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মেলামেশা এবং বন্ধুদের ওপর টাকা ওড়ানো বন্ধ করে দেন স্ত্রী। সঞ্জয় কী খাবেন, কী পরবেন সবই নাকি এখন স্ত্রীর কথা মেনে হয়।

২০০৮ সালে গোয়ায় বিয়ে করেছিলেন তারা। তার দু’বছর পর যমজ সন্তানের জন্ম দেন মান্যতা। মান্যতাকে বলিউডের বড় তারকা করে তোলার চেষ্টায় কোনো কমতি রাখেননি সঞ্জয়। মান্যতাও নিজেকে দত্ত পরিবারের বৌমা করে তোলার পুরোপুরি চেষ্টা করে গিয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও বলিউডের তারকা হয়ে উঠতে পারেননি তিনি। দত্ত পরিবারের অন্যান্য সদস্যেরাও এখনও তাকে মেনে নিতে পারেননি।

পাঠকের মন্তব্য